২০১০ সালের ২ থেকে ১৬ নভেম্বর তারিখে OFPRA এবং CNDA এর একটি যৌথ মিশন বাংলাদেশে গিয়ে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ২১৪ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বাংলাদেশীদের আবেদন পরীক্ষার সময় মুলত এই প্রতিবেদনটিকেই মুল ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। উক্ত প্রতিবেদনে ভুয়া ডকুমেন্টস্ এর ব্যাপারে অনেক উল্লেখ আছে যেমনঃ
মামলার দলিলঃ
প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, যে সমস্ত ডকুমেন্টস্ (জাতীয়তা সনদপত্র, মামলার দলিলসমুহ, ইত্যাদি) ফরাসী কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেয়া হয়, এগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাজারে বিক্রীত ফর্ম এর উপর ভিত্তি করে ফ্রান্সেই তৈরী করা হয়। কিছু উকিল (যারা কিনা প্রায়ই অন্ধ রাজনীতিবিদ এবং মাঝে মাঝে দুর্নীতিগ্রস্হ), বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষের দ্বারা শপথ গ্রহনকারী লোকজন (যাদেরকে ‘নোটারী পাবলিক’ বলা হয়) এবং বিচারকগণও এই সমস্ত ডকুমেন্টস্ এর যোগান দিয়ে থাকেন তাদেরকে, যারা বাংলাদেশে এর জন্য আবেদন করে। এনজিও ‘অধিকার’ এর মতে, আদালতের কর্মচারীদের দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে ভুয়া ডকুমেন্টস্ যোগাড় করা সহজ।
বাংলাদেশী আশ্রয় আবেদনকারীদের দ্বারা দাখিলকৃত সমস্ত দলিলপত্রের সত্যতার অভাবে যদি এদের সবাইকে সাধারনভাবে এক দৃষ্টিতে বিবেচনা না করা হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে এবং ফ্রান্সে এই সমস্ত ভুয়া ডকুমেন্টস্ খুব সহজেই যোগাড় করা সম্ভব – এটা বিবেচনা করে এগুলি সত্য না মিথ্যা তা যাচাই করার সময় খুবই সতর্ক থাকতে হবে।

OFPRA এবং CNDA এর যৌথ মিশন ২০১৫ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ সংক্রান্ত তৃতীয় প্রতিবেদনে মামলার দলিল সম্পর্কে উল্লেখ করে যেঃ
মামলার দলিল পাওয়ার ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা আছে। একজন ফৌজদারি আইনজীবীর মতে, আসামীর অনুপস্থিতিতে সুনির্দিষ্ট বিচারের ক্ষেত্রে, কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরেই কেবলমাত্র আসামী মামলার দলিল এর সত্যায়িত অনুলিপি বা সার্টিফাইড কপি পেতে পারে। তথাপিও, যদি একই মামলায় একাধিক আসামী থাকে, তাহলে পলাতক আসামী তার যেকোন একজন সহযোগী আসামীর উকিলের সাথে যোগাযোগ করে তার নিকট থেকে সম্পুর্ণ বৈধভাবে একটি সত্যায়িত নকল বা সার্টিফাইড কপি এর একটি সিম্পল কপি, সোজা বাংলায় ফটোকপি পেতে পারে। এই ক্ষেত্রে অবশ্যই সহযোগী আসামীর সহিত খুবই উন্নতমানের সম্পর্ক থাকতে হবে।
সংক্ষেপেঃ
১। কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরেই কেবলমাত্র পলাতক আসামী মামলার দলিল এর সত্যায়িত অনুলিপি বা হলুদ কাগজ পেতে পারে।
২। তবে একই মামলার অন্য কোন আসামীর সহিত উন্নতমানের সম্পর্ক থাকলে উক্ত সহযোগী আসামীর উকিলের মাধ্যমে সত্যায়িত নকল বা হলুদ কাগজের একটি সাদা ফটোকপি অর্জন করা সম্ভব।
পছন্দের উকিলঃ
নীতিগতভাবে, একজন পলাতক আসামীর অনুপস্থিতিতে, তার কোন আইনি প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার অধিকার নাই, সোজা বাংলায়, পলাতক আসামীর পক্ষে কোন উকিল তাকে আদালতের সন্মুখে রক্ষা করতে পারবে না। তবে, যদি সন্দেহভাজন ব্যাক্তির মৃত্যুদন্ডের ঝুঁকি থাকে, তাহলে রাষ্ট্র তাকে রক্ষা করার জন্য একজন সরকারী আইনজীবী বা উকিল নিযুক্ত করতে বাধ্য। অনুপস্থিত আসামীর নিজ পছন্দ অনুযায়ী একজন আইনজীবী নিয়োগ করার কোন অধিকার নেই। আরেকটি ব্যতিক্রম হল যে, যদি উক্ত ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট মামলাটি আদালতে নিবন্ধন হওয়ার পরে পলাতক হয়, এবং যদি পূর্বেই বা প্রথম থেকেই একজন আইনজীবী তাকে প্রতিনিধিত্ব করে থাকে, তাহলে এই একই আইনজীবী তাকে নীতিগতভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে। যদি একজন আসামী বিচারের পুর্বক্ষণে কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করে, তাহলে সে জামিন পাবে না।
সংক্ষেপেঃ
১। পলাতক আসামীর জন্য কোন উকিল আদালতে উঠতে পারবে না
২। যদি পলাতক আসামীর মৃত্যুদন্ডের ঝুঁকি থাকে, তাহলে সরকার তাকে সরকারী উকিল দিতে বাধ্য, তবে আসামী নিজ পছন্দ অনুযায়ী কোন আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে না
৩। মামলাটি আদালতে নিবন্ধন হওয়ার পরে আসামী পলাতক হলে এবং যদি প্রথম থেকেই তার কোন উকিল থাকে তাহলে এই একই আইনজীবী তাকে নীতিগতভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।

OFPRA/CNDA তে কিছু কাগজপত্র জমা দেয়ার চেয়ে না দেয়াই মঙ্গলজনক
কাগজ জমা দেয় মানুষ কেস পাওয়ার জন্য, কিন্তু সেই কাগজই যদি হয়ে যায় কেস না পাওয়ার প্রধান কারণ …
ইদানিং যারা কাগজ জমা দেয় তাদেরকে OFPRA মুল সমস্যার তুলনায় কাগজের উপরই বেশি প্রশ্ন করে এবং প্রায় সবাইকে বলে যে, « আপনার কাগজপত্রের তুলনায় আপনার মৌখিক বক্তব্যই অধিক গুরুত্বপূর্ণ »। যে সমস্ত কাগজের সাথে আপনার আবেদনের সুনির্দিষ্টভাবে আপনার ভীতির কোন সম্পর্ক নেই এবং যেগুলি আপনার ব্যক্তিগত যেমন আপনার বউ এর চিঠি, OFPRA এগুলি গ্রহণ না করে ভদ্রভাবে ফিরিয়ে দিচ্ছে।
২০১০ সালের ২ থেকে ১৬ নভেম্বর তারিখে OFPRA এবং CNDA এর একটি যৌথ মিশন বাংলাদেশে গিয়ে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ২১৪ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বাংলাদেশীদের আবেদন পরীক্ষার সময় মুলত এই প্রতিবেদনটিকেই মুল ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। উক্ত প্রতিবেদনে ভুয়া ডকুমেন্টস্ এর ব্যাপারে অনেক উল্লেখ আছে, যেমনঃ
১। মামলার দলিলঃ প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে যে, « যে সমস্ত ডকুমেন্টস্ (জাতীয়তা সনদপত্র, মামলার দলিলসমুহ, ইত্যাদি) ফরাসী কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেয়া হয়, এগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাজারে বিক্রীত ফর্ম এর উপর ভিত্তি করে ফ্রান্সেই তৈরী করা হয়। কিছু উকিল (যারা কিনা প্রায়ই অন্ধ রাজনীতিবিদ এবং মাঝে মাঝে দুর্নীতিগ্রস্হ), বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষের দ্বারা শপথ গ্রহনকারী লোকজন (যাদেরকে ‘নোটারী পাবলিক’ বলা হয়) এবং বিচারকগণও এই সমস্ত ডকুমেন্টস্ এর যোগান দিয়ে থাকেন তাদেরকে, যারা বাংলাদেশে এর জন্য আবেদন করে। (…)। এনজিও ‘অধিকার’ এর মতে, আদালতের কর্মচারীদের দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে ভুয়া ডকুমেন্টস্ যোগাড় করা সহজ »। (…) । « বাংলাদেশী আশ্রয় আবেদনকারীদের দ্বারা দাখিলকৃত সমস্ত দলিলপত্রের সত্যতার অভাবে যদি এদের সবাইকে সাধারনভাবে এক দৃষ্টিতে বিবেচনা না করা হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে এবং ফ্রান্সে এই সমস্ত ভুয়া ডকুমেন্টস্ খুব সহজেই যোগাড় করা সম্ভব – এটা বিবেচনা করে এগুলি সত্য না মিথ্যা তা যাচাই করার সময় খুবই সতর্ক থাকতে হবে »।
তাই মামলার দলিলপত্র জমা দেয়ার আগে ভালভাবে চিন্তা করুন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ সমস্ত কাগজে অসংখ্য ভূল থাকে। ভূল কাগজ জমা দেয়ার চেয়ে না দেয়া অনেক ভাল। কয়েক কেজি কাগজ জমা না দিয়ে এক পৃষ্ঠার একটি গ্রেফতারী পরোয়ানা দিয়ে মৌখিক বক্তব্য খুব সুন্দরভাবে উপস্হাপন করেও অনেকে অফ্প্রা থেকে অল্প সময়ে কাগজ পেয়েছেন।
২। বিএনপির এ্যাটেষ্টেশনঃ উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে যে, « বিএনপি রাজনৈতিক কার্য্যকলাপের প্রমানস্বরুপ তার কোন কর্মীকে কোন সার্টিফিকেট বা সনদপত্র প্রদান করে না »।
তাই বিএনপির এ্যাটেষ্টেশন OFPRA/CNDA তে জমা না দেয়াই ভাল। আপনি বিএনপির রাজনীতি করেছেন তা প্রমাণ করার জন্য মিছিল/মিটিং/সভায় আপনার ছবি, এগুলিতে যোগদানের আমন্ত্রনপত্র, দলের দ্বারা প্রদত্ত কার্ড, কোন অনুষ্ঠানের ব্যাজ, চাঁদার রশিদ, নির্বাচিত কমিটির অনুমোদনকৃত প্যানেল লিষ্ট এগুলি জমা দিতে পারেন।
৩। বিহারীদের কাগজঃ প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে যে, « SPGRC কার্ড প্রদান করে। সে ভুয়া কার্ড বাঙালীদের নিকট বিক্রয় করে যারা এই সমস্ত কার্ড দিয়ে শরনার্থীর আবেদন করে থাকবে। এই পন্হায় SPGRC অনেক টাকা আয় করে থাকবে। প্রতিটি কার্ডের মুল্য ১০০ ইউরো হয়ে থাকবে »। (…) «SPGRC এর লোকজন একটি বিহারী এ্যাটেষ্টেশন বা প্রত্যায়ন পত্র প্রদান করার জন্য ৯০ ডলার দাবী করতো। এই ডকুমেন্টস্ গুলি প্রায়ই বিদেশে শরনার্থী আবেদনের প্রমাণস্বরুপ উপস্হাপন করা হয় »।
তাই উপরোক্ত দলিলপত্র জমা দেয়ার আগে ভালভাবে চিন্তা করুন।
Sep 04, 2015 2:30pm
October 11, 2017 ·
৪। গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য কার্ডঃ
OFPRA এবং CNDA এর যৌথ মিশন ২০১৫ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ সংক্রান্ত তৃতীয় প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, « শ্রমিক ইউনিয়নসমুহ তাদের ফেডারেশনকে (শ্রমিক ইউনিয়নসমুহের জোট) বাৎসারিক চাঁদা পরিশোধ করে। ফেডারেশন সদস্য কার্ড দেয় না »। (…) « শ্রমিক ইউনিয়নসমুহ সদস্য কার্ড প্রদান করে না, কিন্তু ইউনিয়ন কর্মীর সাধারণত একটি সদস্যপদ নাম্বার থাকে»।
তাই উপরোক্ত দলিলপত্র জমা দেয়ার আগে ভালভাবে চিন্তা করুন।
হলুদের বিকল্প (রায় ঘোষনার পূর্বে)
এই একটি মাত্র পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি কি প্রমাণ করেনা আপনি একটি মামলার আসামী ?
শুধুমাত্র এই বিজ্ঞপ্তিটিই কি আপনার ৩/৪ কেজি হলুদ কাগজের বিকল্প নয় ?
রিমাইন্ডারঃ হলুদ কাগজ বা জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পের উপর মামলার কাগজ জমা দিলে বর্তমানে অধিকাংশ কেস রিজেক্ট হয়। অন্যভাবে বলতে গেলে, ২০১৫/১৬ সাল থেকে কেস রিজেক্ট করার একটা নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য উপাদান হলো জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পের উপর মামলার কাগজ জমা দেয়া।
এগুলি জমা দেয়া বর্তমানে একটি ‘ফাঁদ’ বা “Trap”. থাক, কাউরে কইয়েন না, হলুদ কাগজ অনুবাদ না করলে একটা বউ আর দুইটা বাচ্চা লইয়া না খাইয়া মরতে অইবো।

দুই কুতুবের CNDA এর গল্প
কুতুবদ্বয় বাংলাদেশী, দুইজনেরই অফ্প্রা থেকে রিজেক্ট হইছে। দুই কুতুব তৃতীয় এক কুতুবের কাছ থেকে CNDA তে কেস পাঠানোর লক্ষ্যে আপীল লিখায় এবং যেহেতু সবাই কুতুব বংশের তাই তৃতীয় কুতুবের পিছ প্রথম দুই কুতুবের কেহই ছাড়ে না। তৃতীয় কুতুব দুইজনকেই বলে তোমাদের দুজনেরই কেস পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা, শর্ত হচে্ছ সূচীপত্রের ১২ নং অধ্যায় ভাল করে পড়তে হবে এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে (কমেন্টস এ দেখুন)। তাদেরকে পরামর্শ দেয়া হয় ডকুমেন্ট এর উপর জোড় না দিয়ে মৌখিক বক্তব্যের উপর জোড় দিতে। এখন শুনুন দুই কুতুবের CNDA এ্যাডভেনচার।
প্রথম কুতুবঃ
জিল্ পিকুয়া তার কেস নেয়। তৃতীয় কুতুব তাকে পরিস্কারভাবে বলে দেয় মামলার হলুদ কাগজ বা কোর্ট ষ্ট্যাম্পের উপর লেখা মামলার কাগজ দিলে তুমি কেস পাবে না। তারপরও সে বড় ভাই ও খালুদের কথা শুনে শপথগ্রহণকারী অনুবাদক দ্বারা মামলার হলুদ কাগজসহ অনেক কাগজ অনুবাদ করায়। ২০১৭ সালের মার্চে তার কেস CNDA থেকে রিজেক্ট হয়। রিজেক্টে লেখা হয় সে বিএনপির এ্যাটেষ্টেশন কিভাবে পেল বিশ্বাসযোগ্য নয় এবং অফ্প্রা/কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে মামলার ভুয়া কাগজ দুর্নিতীর মাধ্যমে যে কেউ খুব সহজেই যোগাড় করতে পারে।
দ্বিতীয় কুতুবঃ
জিল্ পিকুয়ার প্রাক্তন ইন্টার্নী থমাস ওয়েল্ডিং এর কাছে তাকে পাঠানো হয়। সে কয়েক কেজি মামলার হলুদ কাগজ সহ ১২ নং অধ্যায় অনুসারে কিছু কাগজ দেয়। তৃতীয় কুতুব তাকে পরিস্কারভাবে বলে দেয় হলুদ কাগজ দিলে তুমি কেস পাবে না। সে হলুদ কাগজ অনুবাদও করে নাই, জমাও দেয় নাই, তবে ১২ নং অধ্যায় অনুসারে ৪/৫ টি ডকুমেন্ট জমা দেয়। ২০১৭ সালের মে মাসে সে কেস পায়।
উপসংহারঃ
একটা সময় ছিল যখন মানুষ কেস পাওয়ার জন্যে ডকুমেন্ট এর উপর জোড় দিত। বর্তমানে ডকুমেন্ট কেস পাওয়ার থেকে বরং না পাওয়ার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।
তাই ডকুমেন্ট নয়, মৌখিক বক্তব্যের উপর জোড় দেওয়াই কেস পাওয়ার জন্য ভাল।
বিঃদ্রঃ
উপরে শুধুমাত্র দুই কুতুবের একটি তুলনামুলক চিত্র তুলে ধরা হলো। একটা কেস এর সাথে আরেক কেসের ভিন্নতা থাকাই স্বাভাবিক, যদিও সব কেসই মনে হয় একটি কেস। তারপর আছে বুদ্ধিদাতা খালু ও দুলাভাই। সর্বোপরী, যার বুঝ সেই বুঝে।
উইন-উইন মেথড
ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ‘কুব্বত’ তার পাতানো খালুর কাছে গেল কেস সংক্রান্ত পরামর্শ চাইতে।
পাতানো খালু তাকে কহিল কেস পাইতে তোমার সাড়ে দশ কেজি কাগজ লাগিবে। তো ইহার ব্যবস্থা আমি করিয়া দিতে পারি, বাংলা টাকায় ৫০,০০০ টাকা লাগিবে। কুব্বত খালুকে ৫০,০০০ টাকা দিল। খালু ২০,০০০ টাকায় কাগজ তৈরী করিয়া, ৩০,০০০ টাকা উইন করিল বা জিতিল।
অতপর, পাতানো খালু কুব্বতকে নিয়া ফ্রান্সের সমাজসেবক পাড়ায় গেল এবং সমাজসেবকদের নিকট অনুবাদ করিতে দিল। সমাজসেবক তাকে প্রতি পাতায় ২ ইউরো কমিশন দিল অনুবাদ বাবদ।
সমাজসেবক খালুকে আরও ৫০ ইউরো কমিশন দিল মাগনা উকিল বাবদ ও কুব্বত থেকে ৫০০ ইউরো মাগনা সরকারী উকিল বাবদ গ্রহণ করিল।
সমাজসেবক সাড়ে দশ কেজি কাগজ + একুশ কেজি অনুবাদ, মোট সাড়ে একত্রিশ কেজি কাগজ উকিলকে দিল। সমাজসেবক ও উকিল উভয়েই জানে কাগজ দিলে কেস রিজেক্ট হওয়ার সম্ভ্যাবিলিটি বেশি + সাড়ে একত্রিশ কেজি কাগজ দেখলে কমিশনের বিচারক সহ সকল ষ্টাফদের মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে, তারা বিল্লা হয়ে যাবে। তাই উকিল কাগজ আর কমিশনে জমা দিল না।
কুব্বত কেস পেল।
উইন-উইন মেথড, সবাই জিতিল। খালু, সমাজসেবক, অনুবাদক ও উকিল পেল টাকা আর কুব্বত পাইলো কেস।
তবে, লস হলো কুব্বত এর, কারণ সে টাকাগুলি খরচ না করলেও কেস পেত।
———————
উইন-লস মেথড
———————
ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ‘কুব্বত’ তার পাতানো খালুর কাছে গেল কেস সংক্রান্ত পরামর্শ চাইতে।
পাতানো খালু তাকে কহিল কেস পাইতে তোমার সাড়ে দশ কেজি কাগজ লাগিবে। তো ইহার ব্যবস্থা আমি করিয়া দিতে পারি, বাংলা টাকায় ৫০,০০০ টাকা লাগিবে। কুব্বত খালুকে ৫০,০০০ টাকা দিল। খালু ২০,০০০ টাকায় কাগজ তৈরী করিয়া, ৩০,০০০ টাকা উইন করিল বা জিতিল।
অতপর, পাতানো খালু কুব্বতকে নিয়া ফ্রান্সের সমাজসেবক পাড়ায় গেল এবং সমাজসেবকদের নিকট অনুবাদ করিতে দিল। সমাজসেবক তাকে প্রতি পাতায় ২ ইউরো কমিশন দিল অনুবাদ বাবদ।
সমাজসেবক খালুকে আরও ৫০ ইউরো কমিশন দিল মাগনা উকিল বাবদ ও কুব্বত থেকে ১২০০ ইউরো মাগনা সরকারী + প্রাইভেট উকিল বাবদ গ্রহণ করিল।
সমাজসেবক সাড়ে দশ কেজি কাগজ + একুশ কেজি অনুবাদ, মোট সাড়ে একত্রিশ কেজি কাগজ উকিলকে দিল। বুইড়া-আইলসা উকিল, অনেক কিছু জানে না, নতুন নতুন আইনকানুন ও তথ্য সে জানে না। সে কাগজ কমিশনে জমা দিল।
কুব্বত এর কেস রিজেক্ট হলো। রিজেক্টে লেখা,
“বাংলাদেশে টাকা দিয়ে যে কেউ খুব সহজে মামলার হলুদ কাগজ সহ অন্যান্য সকল কাগজ বানাইতে পারে এবং সে কাগজ কিভাবে পেলো তাহা বোধগম্য নহে, কারণ পলাতক আসামী হলুদ কাগজ আনতে পারে না।”
উইন-লস মেথড, সবাই জিতিল। শুধু হারিলো কুব্বত, যদিও তারই জিতার দরকার ছিল, শুধুই তার। কারণ, অন্যরা কুব্বতের টাকা ছাড়াও বাঁচতে পারবে, কারণ তারা সরকারী ভাতা পায় বা পাবে।
————————————-
অবশেষে,
বাস্তব জীবনের বাস্তব বা সত্যিকার ডকুমেন্ট দিতে পারেন যদি তা আপনার ভীতির সাথে সম্পর্কিত হয়, যেমনঃ
জাতীয়তা বা বাংলাদেশে উপস্থিতি প্রমাণের জন্য,
- জন্ম সনদ
- জাতীয় পরিচয় পত্র
- পড়াশুনা সার্টিফিকেট বা চাকুরীর নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজ
- রাজনীতি বা ধর্ম প্রমাণের জন্য,
- ছবি
- চিঠিপত্র
- সংবাদপত্রের প্রকাশনা
মামলা বা রায় প্রমাণের জন্য,
- সংবাদপত্রের সমন নোটিশ
- রায় হয়েছে মর্মে সংবাদপত্রের নিউজ
- আপনার পরিবারের কোন সদস্য যদি একই মামলার আসামী হয় এবং তারা যদি জেলে থাকে ও তাদের সাজা হয়, তাহলে তাদের মামলার কাগজ দিতে পারেন। এই ধরনের একজন আশ্রয়প্রার্থী সাজাপ্রাপ্ত বন্দী বাবা-ভাই এর হলুদ কাগজ না দেয়ায়, অফ্প্রা মাইন্ড করেছে।
- জমি বিরোধ সংক্রান্ত কেস হলে,
- জমির দলিল
- জমির রেকর্ড
- পড়চা
- প্রেম-ভালবাসার কেস হলে
- নিকাহনামা
- কোর্টে বিবাহের প্রমাণ
- প্রেম-ভালবাসার প্রমাণ, যেমনঃ ছবি
ইত্যাদি
ডকুমেন্ট না মৌখিক বক্তব্য ? কিছু তথ্য ও উপদেশ
হলুদ কাগজের উপকারিতাঃ কাগজ বানানোর টেহাও গেলো, অনুবাদের টেহাও গেলো, কেসও গেলো।
পুর্বে ৯৯% বাংলাদেশী কাগজ জমা দিতো, কেস পেতো ৮% এর কম। এখন কাগজ জমা না দিয়েই বেশি কেস পায়, মোট ১৭% এরও বেশি। তাহলে, কাগজ দিয়ে ৯০% এর অধিক আশ্রয়প্রার্থী কেস পায়না কেন?
কাগজ দিলেই যদি কেস পাওয়া যাইতো, তাহলেতো সবারই কেস পাওয়ার কথা। তো পায় না কেন? টাকায় কেনা কাগজ না দিয়ে বাস্তব জীবনের কিছু থাকলে দিন
অফ্প্রা/CNDA ২০১০ সালে জানে ফ্রান্সেই ভুয়া কাগজ বানানো হয়
২০১৫তে জানে পলাতক আসামী হলুদ কাগজ আনতে পারেনা ও পছন্দের উকিল ধরতে পারেনা
কাগজ জমা দেয় মানুষ কেস পাওয়ার জন্য, কিন্তু সেই কাগজই যদি হয়ে যায় কেস না পাওয়ার প্রধান কারণ …
অফ্প্রার কিছু সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী কর্মকর্তা ইদানিং ১০ কেজি কাগজ জমা দিলে ৩০ গ্রাম রেখে বাকি সব ফেরৎ দেয় । অফ্প্রা যদি ডকুমেন্ট নাই রাখে তো টাকা দিয়ে ডকুমেন্ট বানাবেন ও অনুবাদ করাবেন কার স্বার্থে? আপনার, কাগজ নির্মাতার না অনুবাদকের?
অনুবাদক, সরবরাহকারী ও আদম-দালালদের উদ্দেশ্যেঃ ভয় নাই, যারা ইউরোপ আসতে চায় তারা আসবেই, যে ভুয়া কাগজ জমা দিতে চায় সে দিবেই, কারো পিতারও সাধ্য নাই তারে আটকায়। সমস্যা নাই, সরল কেউ হলুদ কাগজ না দিতে চাইলে তাকে সুন্দর করে বুঝাবেন, বলবেন “হলুদ দিয়া আমার নানা, খালু ও আমি কেস পাইছি, আপনেও পাবেন” ।
জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পের উপর হলুদ কাগজের বিকল্প হলো রায় হওয়ার পুর্বে সংবাদপত্রে সমন বা হাজির হওয়ার নোটিশ ও রায়ের পর পত্রিকার সংবাদ ।
হলুদ কাগজ কতৃপক্ষ দেখেও না, এগুলি কিছু কাগজ প্রস্তুতকারক ও অনুবাদকের জীবিকার উৎস। হলুদ কালচার জাতীয় সমস্যা। এটা বন্ধ করতেই হবে।
OFPRA প্রায় সবাইকে বলে যে, «আপনার কাগজপত্রের তুলনায় আপনার মৌখিক বক্তব্যই অধিক গুরুত্বপূর্ণ»। কাগজ ছাড়াই অসংখ্য লোক কেস পাচ্ছে।
ফ্রান্সে উত্তরাধিকার সূত্রে বাঙালি বাটপার আছে। তবে অনুবাদক/ডিশওয়াশার কেউ পৈত্রিক সূত্রে এই পেশায় আসে নাই। অনুবাদক একদিন বাসন মাজবে
হলুদ চ্যাপটার ক্লোস্ড। শুধু বাংলাদেশ থেকে ইস্যুকৃত বিএনপির এ্যাটেষ্টেশন দেয়ার অপরাধে কয়েক হাজার বাংলাদেশীর কেস রিজেক্ট হইছে ।
OFPRA কাগজ অপছন্দ করলেও জমি বিরোধ সংক্রান্ত কেসে দলিল না দিলে উল্টা রাগ করে, বলে প্রমাণ নাই। তাই জমির দলিল হলুদ হলেও অবশ্যই দিবেন।
গত একমাসে অন্তত ১৫ জনের কেস পাওয়ার সংবাদ পাইছি। কেউ মামলার হলুদ কাগজ দেয় নাই। কেউ দিলেও উকিল জমা দেয় নাই। কেউ জমির দলিল দিয়েছে । November 14 at 10:55am
অফ্প্রা কিছু রিজেক্টে লিখে এ্যাটেষ্টেশন/উকিলের চিঠি এ্যাজাইলামের প্রয়োজনে আনা হইছে। বাস্তব প্রমাণ,ছবি,আমন্ত্রন বিকল্প হতে পারে ।
মোট কথা, ভাল মৌখিক বক্তব্য দিলে ডকুমেন্টস ছাড়াই কেস পাবেন। বাজে মৌখিক বক্তব্য দিলে এক ট্রাক কাগজ দিলেও কেস পাবেন না । ভাল মৌখিক বক্তব্য অফ্প্রাতে দিতে হবে, CNDA দুধভাত। অফ্প্রার থাবর খেয়ে আপনি CNDAতে বিচার দিছেন। CNDA দেখে দোষ কার? আপনার না অফপ্রার?
অনেক রিজেক্টে উল্লেখ আছে জমাকৃত ডকুমেন্ট এর সাথে লিখিত কেস বা মৌখিক বক্তব্যের মিল নাই। তার মানে কাগজটাই রিজেক্টের প্রধান কারণ ।
অফ্প্রা/CNDA অনেক রিজেক্টে লিখে মামলার কাগজ কিভাবে পেল বিষয়ে বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয়
ডকুমেন্টের পেছনে সময় ও ব্রেইন নষ্ট না করে কেস বিষয়ক পড়াশুনা করলে অধিক বাংলাদেশী কেস পাবে।
হলুদ মামলার কাগজ নয়, এর বিকল্প যেমন সমন নোটিশ। এ্যাটেষ্টেশন নয়, বিকল্প যেমন ছবি। মিনিমাম বাস্তব কাগজ দিন, যুক্তিসঙ্গত কথা বলুন।
কার্ডে “Stuff Repoter” লেখা দেখলে OFPRA বুঝে কি জাত Staff Reporter. ইন্টারভিউয়ার বকলম না, গান্জা খাইয়াও সাক্ষাৎ নেয়না । মজার ব্যাপার হলো “Stuff Repoter” এর প্রস্তুতকারক এবং ব্যবহারকারী উভয়েই শরনার্থী সাংবাদিক এবং দুজনের কেউই জানেনা যে এটা ভূল ।
পৃথিবীর সকলকে ‘ভোদাই’ ভাবা যেমন বোকামী, অন্যদিকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভাল, অমায়িক বিশিষ্ট ভদ্রলোকটিকে ‘বিশ্বাস’ করাও তেমনি বোকামী।
জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পের উপর হলুদ কাগজের বিকল্প হলো রায় হওয়ার পুর্বে সংবাদপত্রে সমন বা হাজির হওয়ার নোটিশ ও রায়ের পর পত্রিকার সংবাদ
মামলার রায়, এজাহার, প্রাথমিক তথ্য বিবরণী, গ্রেফতারি পরোয়ানা, অভিযোগ পত্র, জামিননামা, আদেশনামা ইত্যাদি “প্রায় হলুদ বর্ণের” জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পের উপর টাইপ করা হলে তাহাকে সাধারণত ফ্রান্সের রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী, দালাল, অনুবাদক ইত্যাদি সন্মানীত ব্যক্তিবর্গ আদর করিয়া “হলুদ কাগজ” বলেন
মামলার হলুদ কাগজ দাও
তারপর ভরে দাও
তারপর ব্যাথা দাও
যতক্ষণ না অফ্প্রা-কমিশনে জমা দেয়া হবে
ততক্ষণ পর্যন্ত হবে না
Mind Satisfaction
Satisfaction, Satisfaction, Satisfaction….
কেস পাই আর না পাই
পরে দেখা যাবে
সবার আগে দরকার
মনের সন্তুষ্টি
সন্তুষ্টি, সন্তুষ্টি, সন্তুষ্টি…